মুক্তিস্নান
সকাল ৯ টা, শরৎ এর আকাশে কিছু পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘ রোদে ঝলমল করছে, রাস্তার দুই ধারে বিভিন্ন ক্লাবের আসন্ন দুর্গাপূজার বিজ্ঞাপন| রাস্তায় শুরু অফিস যাবার ব্যস্ততা। বাসে ,ট্রেনে শুরু হয়েছে বাদুড় ঝোলা ভিড়। হর্নের শব্দ, পোড়া পেট্রলের গন্ধ ধীরে ধীরে বাতাসকে গ্রাস করছে|
অবিনাশের গাড়ি বেশ কিছুক্ষণের জন্য ট্রাফিক জ্যামে আটকে, একরাশ বিরক্তি অবিনাশের চোখে মুখে,বার বার ও ঘড়ি দেখছে। অফিস টাইমে কলকাতার রাস্তা যেন কেন্নোর গতিতে চলে| অবি-র ইয়ারফোনে তখন সুদূর আমেরিকার সাথে মিটিং চলছে, এবার তার কোম্পানির performance ভালো হয় নি, মিটিং এ তার ই বিশ্লেষণ চলছে। কোম্পানির sales টার্গেট fulfill করার জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করে অবিনাশ, এবং অফিসের উচ্চপদস্থ অফিসারদের বেশ সুনজরে সে। অবিশ্যি, নিন্দুকেরা বলে অফিসারদের তোষামোদ করেই তার উন্নতি হচ্ছে। অবি এসবে কান দেয় না, ওর মতে career এ উপরে ওঠার জন্য সব পন্থাই ঠিক।
মিটিং এ সকলকে তার ই উদাহরণ দেওয়া হচ্ছিলো, বাকিদের অবি যেভাবে কাজ করে সে পন্থা অনুকরণ করতে বলা হচ্ছিলো|
“বাবু! কিছু টাকা দেবেন, দু দিন কিছু খাই নি।” হঠাৎ গাড়ির জানলার কাছে একটা শীর্ণ, কালো , নোংরা হাত দেখা দিলো , অবি চমকে উঠে ছেলেটার দিকে তাকালো| ছেলেটার বয়স ১২-১৩ হবে, অপুষ্টিতে আরও কম মনে হচ্ছে|
ছেলেটার মুখের আদলটা চেনা চেনা লাগছে না? কোনো খুব কাছের লোকের সাথে এই ছেলেটার মুখের খুব মিল আছে। কার সাথে? কিছুতেই মনে পড়ছে না, অদ্ভুত এক অস্বস্তি ঘিরে ধরলো অবিকে। পিছনে অন্য গাড়ি গুলো থেকে হর্নের শব্দে ওর সম্বিৎ ফিরে এলো। ব্যাগ থেকে একটা ১০ টাকার নোট বার করে ও ছেলেটার হাতে দিয়ে ও গাড়িটার গতি বাড়ালো।
সারাদিন অফিসের ব্যস্ততার মাঝে ওর মনে বার বার ওই ছেলেটার মুখটাই আজ ভেসে উঠছে। ওর কলিগ ও বন্ধু অঞ্জন ওকে একবার জিজ্ঞেস করে গেলো-“কিরে , কিছু হয়েছে? আনমনা লাগছে।”
“না না ,কিছু হয় নি ,” অবি এড়িয়ে যায়।
অফিসে সারাদিন খুব ব্যস্ততা যায় অবি-র। আজ ওর স্ত্রী কল্পনা ২-৩ বার ফোন করেছে । মেয়ে শ্রুতির খুব জ্বর, একবার ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কল্পনা অবি কে বার বার তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য বলেছে। কিন্তু আজ ওর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে , ক্লায়েন্টদের সাথে মিটিং, কিছুতেই বাড়ি তাড়াতাড়ি যেতে পারবে না। কল্পনা শেষ বার ফোন করে বললো –
“আসলে মেয়েটা বার বার তোমার কথা বলছে ,তাই “।
“দেখছি “ -অবি বললো , যদিও কল্পনা জানে এটা শুধুই মন রাখার জন্য বললো অবি।
রাত্রে dinner করে শোবার ঘরে গিয়ে শ্রুতির কপালে হাত দিলো অবি । দেখলো জ্বর তখন ও আছে।
“ডাক্তার কি বললো ?”- অবি জিজ্ঞাসা করলো।
“২-৩ দিনের ওষুধ দিয়েছে , বলেছে না কমলে ব্লাড টেস্ট করতে। শ্রুতি বার বার তোমার কথা বলছিলো ,বলছিলো দাদাই এর বাড়ি যেতে ইচ্ছা হছে ,”-কল্পনা বললো।
“হুম “-বলে অবি ল্যাপটপে অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
এর দুদিন পর, আজ মহাষষ্ঠী। মণ্ডপে মণ্ডপে দূর্গা মায়ের মূর্তি আনা হচ্ছে , ঢাকের বাজনা আর তারস্বরে বাজা হিন্দি গান কলকাতার বাতাসে আধিপত্য বিস্তার করছে। আজ একটু জলদি ই বাড়ি চলে এলো অবি, না হলে রাস্তায় আবার ট্রাফিক জ্যাম এ পড়তে হবে। বাড়িতে ফিরে একটা জরুরি কাজ করতে হবে অফিসের। রাত্রে দেশের বাড়ি থেকে বাবার ফোন এলো।
“কেমন আছিস অবি ?”
“ভালো ,তুমি কেমন?”
“শরীরটা ভালো যাচ্ছে না রে, প্রেসার টা বেড়েছে মনে হচ্ছে। তুই আসবি কবে গ্রামে ? পুজোতে একদিন আয় না দিদিমনি কে নিয়ে। “
“এখন কাজের খুব চাপ বাবা ,সামনের এক দু মাস যেতে পারবো না। তুমি কি রোদ্দুরে বাগানে থাকছো ? জগন কে ডেকে বাগানের কাজ টা করিয়ে নিতে পারো তো।”
“আরে তোকে বলা হয় নি ,জগন পরশু মারা গেছে।”
“সেকি ?কিভাবে?”
“আরে মদ খেয়ে খেয়ে শরীরে আর কিছু ছিল না।”
হঠাৎ একটা বিদ্যুৎ খেলে গেল অবির মাথায় , সেই রাস্তার ছেলেটার মুখটা অনেকটা রুদ্রুদার মতো না?
গ্রামের স্কুল জীবনের ওর আদর্শ ছিল রুদ্রদা , ওর শৈশব ও কৈশোরের অনেকটা জুড়ে রুদ্রদার স্মৃতি। ও ছিল সবার থেকে আলাদা , ১২ -১৩ বছর বয়স থেকে ডাকাবুকোদের দলে ওর নাম ছিল। ভয়ডর ছিল না কোনোদিনও। অবি-র মাধ্যমিকের সময়ে রুদ্রদা কলেজ এ ভর্তি হলো , তারপর সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লো।
অবি বলেছিল
“কি দরকার রুদ্রদা এই সব পার্টি পলিটিক্স ?”
“Social system কে ঠিক করতে গেলে তোকে সিস্টেমের মধ্যে থেকেই ঠিক করতে হবে । তুই জানিস ওই গ্রামে কত বেআইনি মদের ভাটি আছে? গরিব গুলো সারাদিনের পরিশ্রমের টাকা এই সব জায়গায় নেশা করে ওড়াচ্ছে আর ওদের বাড়ির বৌ বাচ্চা না খেয়ে থাকছে। এইসব জায়গা গুলো আমাকে বন্ধ করাতেই হবে,পার্টির ছায়া আমার দরকার এসব জঞ্জাল সাফ করার জন্য ।”
তার পর আর একবার ই রুদ্রদার সাথে দেখা হয়েছিল অবি-র , বলেছিলো -“তুই ঠিক এ বলেছিলি রে অবি ,পলিটিক্স জায়গাটা ভালো নয় ” ।
উচ্চ মাধ্যমিকের পর অবি কলকাতায় চলে এলো পড়তে , বাবার কাছে পরে জানতে পেরেছিলো রুদ্রদাকে ৩- ৪ দিন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ৩-৪ দিন পর নদীর ধারে এক নির্জন জায়গায় রুদ্রদার লাশ পড়েছিল। কানাঘুষো শোনা যায় , রুদ্রদা গ্রামের যেসব মদের ভাটি বন্ধ করার আন্দোলন শুরু করে, কিন্তু সেই মদের ভাটি থেকে লাভের একটা বড় অংশ রুদ্রদার পার্টির কাছে আসতো, সেজন্য ওর পার্টির লোকজন ই ওকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে|
রুদ্রদা নেশাকে প্রচন্ড ঘৃণা করতো, বলতো “অবি, নেশা দুর্বল চিত্তের লোকজনের অজুহাত, নিজের মনকে এমন ভাবে তৈরি করা উচিত, কোনো কিছুই যেন প্রয়োজনের বেশি আকৃষ্ট না করতে পারে।”
সময়ের সাথে সাথে রুদ্রদার স্মৃতি ও কথাগুলো মনের মনিকোঠায় হারিয়ে গেছিলো, আজ আবার সব মনে পড়ছে অবি-র।
অবি ভাবলো সে নিজেও কি সাফল্য আর অর্থের প্রতি আকৃষ্ট নয়? সে নিজেও কি নেশাগ্রস্ত নয়? অফিস, কাজ ছাড়া আর কিছুই তো ভাবতে পারে না। এই দিশাহীন সাফল্য কি ওর পরিবার কে ওর থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে না? অর্থের নেশায় তো সে মরীচিকার পিছনে ছুটছে। অবি কি জানে কোথায় থামতে হবে?
উদ্ভ্রান্ত বণিকের মতো শুধু দুনিয়ার বাজারে সুখ কিনতে নেমেছে। খাঁচার পাখির মতোই তো তার জীবন, শুধু তার খাঁচাটা সোনার।
কল্পনার ডাকে অবিনাশের সম্বিৎ ফিরলো।
“অবি ,অবি ,শ্রুতির জ্বর টা তো ছেড়েছে ,ডাক্তার কিছুদিন জন্য জল হাওয়া বদলের জন্য বলছে …”
অবি কিছু উত্তর দিলো না। কল্পনা কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে উত্তরের আর আসা না করে শ্রুতির ঘরে যাবার জন্য পা বাড়ালো।
“কল্পনা , শোনো?”- অবি বললো।
কল্পনা ধীরে ধীরে এসে অবি-র পাশে দাঁড়ালো , মুখে একরাশ প্রশ্ন ছড়ানো।
“একটু বসবে?”
কল্পনা বসতে বসতে বললো ,“বলো?”
“কল্পনা, নিজেকে খুব একা লাগছে আজ। খুব গ্রামের কথা মনে পড়ছে।”
অবির মুখে এরকম কথা কোনোদিন শোনেনি কল্পনা। চিন্তিত মুখে জিজ্ঞেস করলো, “অফিসে কিছু হয়েছে?”
“না,” অবি বললো ।
কল্পনা আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো অবির। বলল, “তোমার একটু বিশ্রামের প্রয়োজন। ল্যাপটপ মোবাইল বন্ধ করে একটু চোখ টাকে বিশ্রাম দাও। আর গ্রামের জন্য মন খারাপ করলে চলো না পুজোটা ওখানে কাটিয়ে আসি।শ্রুতির ও ভালো লাগবে।”
সম্মতি দিয়ে ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করলো অবি ।
পরের দিন সকাল, অবির গাড়ি হাইওয়ে দিয়ে হু হু করে ছুটে চলেছে ওর গ্রামের দিকে। ফোন switched অফ। অফিসের জন্য মেলবক্স এ আউট অফ অফিস মেসেজ রাখা আছে।
গাড়ির পিছনের সিটে শ্রুতি পুতুল নিয়ে খেলতে ব্যস্ত। ভোরের ঠান্ডা হাওয়ায় পাশের সিটে বসা কল্পনার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। দূরে অবি-র গ্রাম থেকে মহাসপ্তমীর ঢাকের শব্দ ভেসে আসছে। কল্পনা বহুদিন পর গন গুন্ করে উঠলো—
“আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে ..”
বহুদিন পর অবি নিজের অজান্তেই গেয়ে উঠলো …
“আমার মুক্তি ধুলায় ধুলায় ঘাসে ঘাসে … এই আকাশে “…..
লেখক পরিচিতি ~ আনন্দ-র জন্ম 1st April 1984, বীরভূম জেলার চৌহট্টে। এম.সি.এ এবং এম.বি.এ পাশ করে বর্তমানে কলকাতায় তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র কগনিজ্যান্ট-এ কর্মরত। প্রযুক্তিবিদ্যায় পারদর্শীতার পাশাপাশি ওনার লেখনীর দৌরাত্ম ও অতুলনীয়! একটি স্বরচিত কবিতা সংকলনের বই প্রকাশ আনন্দর স্বপ্ন। সেই তিলে তিলে গড়ে ওঠা স্বপ্নের স্বাদ পেতে পারেন Whispering Mirror -এ। দৈনন্দিন জীবনের টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতা ওনার মুখ থেকে শোনার আনন্দই আলাদা। অশেষ ধন্যবাদ আনন্দ বাবুকে আমাদের anariminds.com এ ওনার ছোটগল্প পাঠানোর জন্য। উপভোগ করতে থাকুন ওনার ভিন্ন স্বাদের গল্পমালা।
প্রচ্ছদচিত্র উৎস ~ media.glassdoor.com
প্রচ্ছদচিত্র অলঙ্করণ ~ Anari Minds
45 comments
pore besh valo laaglo kintu sei tripti ba poripurnota pelam na onnano lekha gulo r moto …hoyto khub e jana ghotona mon e chole sab somoy tai hoyto natun kichu khoja ta beshi theke jay
Thank you Angshuman golpo ta porar jonno ebong mullyoban review comment korar jonno.Chesta korbo porer baar aro better lekhar.Anariminds porte thakun vinno vinno swader golper swad pete.
Great creative script Ananda. All the best.
Thank you Jayanta
Good one … keep it up
Thank you Biswajit
আনন্দকে অনেক শুভেচ্ছা। প্রথম প্রয়াশের পর অনেক পরিণত পদক্ষেপ।
এবার আসি গল্পে।
১. গল্পে বিপ্লবী মানেই রুদ্র নাম হতে হবে .. এতা যেন অলিখিত নিয়ম
২. মদ মানেই খারাপ এবং সেটা আক্রমন করলেই বিপ্লব
৩. ষড়রিপুর মধ্যে তো প্রায় সব গুলি বাকি রয়ে গেল
৪. সব সময় মুক্তি পাবার চিন্তাও তো আরেক বন্ধন
৫. বাড়ির লোকের কথা বা পুরান কথা মনে করতে গেলে কেন কোন বাচ্চাকে ভিক্ষা করতে হবে
Dhanyobaad Shantanu ei golpota eto nikhut bisleson korar jonno..Chesta korbo porer baar ei point gulo mathai nie lekhar….
Darun Ananda.Its a perfect reflection of our life.It made me feel talking to myself.Don’t put down ur pen.
Thanks prapti
Osadharon.. khub sundor tule dhorte perechis… kintu fire ase to abar sei .. mukti ki se sotti pelo…
Keep it up man.. waiting for next column.
Thanks sujit..thik bolechis ..samoik mukti bolte paris 🙂
Wonderful Composition!
Thank you Subho….stay connected to Anaris for more stories…
Excellent detailing….smooth writing.. We can relate 2 ourselves. Carry on
Thank you saraswat….Anariminds er baki golpo gulo poro r enjoy koro…
Icchye abong badtab somantoral rekha…ichye jibon ta ke nijer mato kore bachar janya..bastab ..jibon ta ke aar pach joner rheke aktu unnotovabe egiye niye antim e pouchanor..
Janina ei antim kobe..kothai…
@Ananda..egiye jao
Dhanyobad Sunanda ei sundor review ta post korar jonno…Anariminds e baki golpo gulo o poro ebong review comment dio..
Kabe je oi gan gaite parbo ke Jane. Sundar. Jeno sab chokhe vese uthchr
Thank you boss
baah Anandada, naamkoron too good….ar golpota pore exact feeling tao holo……Abi muktisnato holo …..jodio amra ADPians sokolei bodhoe Abi-r jaegay Anondokei dekhte pelam :D……fantastic feel shob miliye…..khub bhalo likhchho, chaliye jao 🙂
Thank you samali…:)
daruuuun/…………….
thank you 🙂
Khub sundor . A rkm golpo ro porte chai
thank you..:)
Darun laglo pore ananda da….
thank you soumyajit
Sundor :)..ekdm nijer bhabna tai express korecho 🙂
thanks supurna…sabar e ..tai na???atleast ajker dine sabai to chutchi….ortho,safollo jeno neshar moto tanche…amra rooter theke anek dure chole jachi….
Very good
Thank you 🙂
খুব সুন্দর লেখা।এমন রচনা বর্তমানে খুব কম চোখে পরে। আনেন্দর কাছে এই ধরনের আরো লেখা পাবার আশায় থাকলাম।
Thank you.. 🙂
Khub valo laglo ananda da…
Thank you Subhra
অসাধারণ। সত্যি জীবনের ব্যস্ততা আর সাফল্যের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে মূল্যবোধ গুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। খুব ভালো লাগলো পরে। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ শ্রীতমা
Bah Ananda… Galpo ta pore besh Bhalo laglo. Amraa Sobai mukti r opekhha e… Amader pae jorano onek rokom er shikol ta Kobe Thik Katie Amraa o mukto hoye Jabo Keu bolte pare na… Tobe Kichu ta shikol Amraa nije Khulte pari… Tomar golpo ta pore Thik oita e mone holo amaar.
Khub sundor lekha.. Aro likhe jao sob badha Erie … 👍👍👍
Thank you Snigdha
Darun hoyeche….
Thank you arijita
Excellent Ananda!
Thanks Sunitda
Comments are closed.