ইয়ার্কি

Anirban & Arijit, Freedom, Humor, Love Story, Marriage, Story, আদতে আনাড়ি, বাংলা

– “ইয়ার্কি মারিস না আনন্দ। ইটস্ সিরিয়াস।” বেশ রাগ নিয়েই কথা টা বলল তানিয়া।

– “ওহ্ সরি সরি! বল কি হেল্প করতে পারি?

– “তুই বুঝবি না। কোনদিন বৃষ্টি তে দাঁড়িয়ে কেঁদেছিস?

– “না। তবে….

– “তবে কি??

– “যতদূর মনে পড়ে, একবার সমুদ্রে দাঁড়িয়ে ইয়ে করেছি।

– “মানে?”

– “না ইয়ে মানে ব্যাপারটা তো একই… তাই না?”

– “স্টপ ইট। সবকিছুই কি তোর কাছে ইয়ার্কি!”

– “তানিয়া, দেখ্ এতো চিন্তা করে তুই কি এটাকে সল্ভ করতে পারবি?

– “আচ্ছা, চল তুই ই সলিউশান দে তাহলে এই প্রবলেম টার দেখি।

– “ওকে। আমার কথা শুনবি তো?

– “আলবাত! যো হুকুম মেরে বোকা।

– “ঠিক হ্যায়। একটা গোমড়া মুখো সেলফি তোল। তারপর ফেসবুকে ফেলে দে feeling sad বলে। তারপর দেখতে থাক।

– “এতে কি ঘন্টা হবে?

– “সবাই এসে কি হয়েছে কি কষ্ট কোথায় ব্যথা এইসব কমেন্ট করবে। আর তুই মুচকি মুচকি হাসবি। কিন্তু রিপ্লাই করবি না।

– “এতে প্রবলেম টা সল্ভ কোথায় হল?

– “আরে পুরো সল্ভ হয়তো হল না। কিন্ত attempt করার জন্য কিছু মার্কস তো পেলি।

– “এনাফ্, আনন্দ! তোর সাথে হয়নি তো, তাই মজা পাচ্ছিস। মাঝে মাঝে মনে হয় সুইসাইড করে নি।

– “সেটা ভালো আইডিয়া! রক্তদান টাও যেমন মাঝে মাঝে করা দরকার, তেমনি দেহদান টাও উপকারি। নতুন দেহ পাবি। নতুন চ্যালেঞ্জেস। বেশ ইন্টারেস্টিং কিন্তু!

– “সেই নতুন দেহের নতুন দু:খ কষ্ট গুলো আরো প্যাথেটিক হলে?

– “না সেটার চান্স কম তানিয়া।

– “কেন?”

– “দুবেলা ল্যাজ নারতে নারতে আমার দরজায় আসবি। আমি ভাল বিস্কুট ই কিনে রাখব।

– “হোয়াট দা…..!

– “আহ্ রাগছিস কেন। পরপর দুবার মানবদেহ পাওয়ার লাক্ সত্যিই খুব কম রে।

– “আমি চললাম। তুই তোর ফুর্তি নিয়েই থাক।

– “আরে বোস বোস। এবার সিরিয়াস। তুই তো ইন্টারভিউ ভালই দিলি। তাহলে এত ভয় কিসের?

– “আনন্দ, ওরা ষাট হাজার cash চায়। তাহলেই দেবে অফার লেটার। সরকারি চাকরির অনেক হ্যাপা রে। কোথা থেকে দেব এত টাকা?

– “চ, তোর বসের ঘরে ষাট টা ছেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছি।

– “গেট লস্ট। আমাকে আর কল করার চেষ্টাও করিস না।” বলে উঠে চলে যায় তানিয়া।

পকেট থেকে নতুন কেনা ফোন টা বের করে ডায়াল করে আনন্দ।

– “হ্যালো আনন্দ। কেমন আছ?

– “ভাল আছি কাকিমা। শুনুন না। তানিয়া ফিরলে ওকে কিছু বলবেন না। সারপ্রাইস টা আপনার জন্য।

– “ও আচ্ছা। কি হয়েছে গো?

– “তানিয়ার চাকরি টা হয়ে গেছে। ওর অফার লেটার টা কয়েকদিনের মধ্যেই পেয়ে যাবে জানতে পারলাম।

– “ও বাবা! এতো বিশাল খবর! কিন্তু ওর তো শুনছিলাম…

– “না না, আর কোন চিন্তা নেই। আর হ্যাঁ, সুখবর টা প্রথম দেওয়ার জন্য পাওনা ট্রিট টা নিয়ে চিন্তা করবেন না। ওটা প্রথম জামাইষষ্ঠী তেই উসুল করে নেবো।”

 

ফোন টা কেটে মেসেজ অপশন এ ক্লিক করে আনন্দ। আঙুলের ছোঁয়ায় সিলেক্ট করে চার টে মেসেজ। গতকালের আসা ATM এর debit SMS। একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ক্লিক করে Delete.

 

লেখক ~ অরিজিৎ গাঙ্গুলি

প্রচ্ছদচিত্র উৎস ~ media.istockphoto.com

প্রচ্ছদচিত্র অলঙ্করণ ~ Anari Minds

13 comments

Comments are closed.