রিটার্ন গিফ্ট
সকালের মিঠে রোদটা গায়ে পরতেই বিছানায় উঠে বসল অলি। মা এসে জড়িয়ে ধরে ওর কপালে একটা চুমু খেল। আজ যে বিশেষ দিন। তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে রোজকার মত সকলকে প্রণাম করে অলি রওনা দিল স্কুলে।
আজ হাফ ছুটি, চারটে ঘন্টা যেন কিছুতেই কাটছে না। কখন যে দেখা হবে পিকুদার সাথে কে জানে। শুধু পিসির ছেলে বললে কম বলা হবে, সেই ছোট্ট থেকে পিকুদাই অলির আইডল। একটা নতুন জায়গায় নিয়ে যাবে প্রমিস করেছে আজ। কাল বাড়ি এসে ওর জমানো পকেট মানিটাও নিয়ে গেছে পিকুদা। তাতে অবশ্য কোন দুঃখ নেই অলির। পিকুর ওপর ওর অগাধ ভরসা।
লাস্ট পিরিয়ডের ঘন্টা বাজতেই ছুট লাগাল অলি। কথা মতই গেটে দাঁড়িয়ে আছে পিকুদা, হাতে একটা বড় ব্যাগ।
“ওর মধ্যে কি আছে?” – অলি জানতে চাইল।
একটু হেসে পিকুদা বল্লো – “পরে দেখাব“।
কিছুটা বাস আর খানিকটা অটোতে এসে একটা বড় গেটওলা বাড়ির সামনে দাঁড়াল ওরা। পিকুর হাত ধরে ভেতরে যেতেই অলি দেখল, একটা বড় ক্লাসরুম, অনেক ছেলেমেয়ে এক সাথে বসে বইয়ের ওপর হাত বুলিয়ে বুলিয়ে কি যেন পড়ছে। পিকু এগিয়ে গিয়ে সামনের মেয়েটির কাধে হাত রেখে বললো, “তোমাদের একজন নতুন বন্ধু এসছে, আলাপ করবে না?“।
একে একে সবার কাছে গেল অলি। কেউ ওর হাত ধরে, কেউ আবার ওর গাল ধরে ওকে ছুয়ে দেখল। ওদের স্পর্শে একটা অদ্ভুদ উষ্ণতা আছে। ওদের জন্য মিষ্টি, ফল আর সুগন্ধি নিয়ে এসেছিল পিকুদা। সুগন্ধি ওদের খুব প্রিয়। অনাবিল আনন্দে ভরে উঠল ওদের মুখগুলো। স্পর্শ আর গন্ধ এই দিয়েই তো ওরা জয় করেছে জীবনের অন্ধকারকে।
হাসি, ঠাট্টা, গান, গল্পে কখন যে সন্ধে হয়ে গেছে টেরই পায়নি অলি। খুব সহজেই ওকে আপন করে নিয়েছিল নতুন বন্ধুরা। সবাইকে বিদায় জানিয়ে এবার বাড়ির পথে রওনা হল ওরা দু’জনে।
বাড়ির গেটে অলিকে নামিয়ে দিয়ে একটু মুচকি হেসে পিকু জিজ্ঞেস করল – “কি রে কেমন লাগল?”
নিচু হয়ে পিকুদাকে প্রনাম করে অলি বল্লো – “আজ তুমি আমাকে জন্মদিনের সবচেয়ে দামী উপহার টা দিয়েছো“।
লেখিকা পরিচিতি ~ প্রাপ্তি চাট্টার্জী
প্রচ্ছদচিত্র উৎস ~ Janpratinidhi.com
প্রচ্ছদচিত্র অলঙ্করণ ~ Anari Minds
One thought on “রিটার্ন গিফ্ট”
daami lekha !!!!
Comments are closed.