অন্য ভ্যালেন্টাইন
– বুড়ো বয়েসে ভিমরতি দেখ। একখানা বেগুন আনতে বললাম, গোটা বেগুনের ক্ষেত তুলে এনেছে।
– সবাই মিলে আজ বেগুন পোড়া খেতে ইচ্ছে করল গিন্নি।
– পোড়ারমুখো টার নিজের পোড়ার বয়স হয়ে গেল, এখনো শখ গেল না।
– পোড়ার আগেই তো সব কামনা বাসনা মিটিয়ে নিচ্ছি গো।
– ওরে ও বিট্টু! এই মিনসে টা কে নিয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে। আজ বাদে কাল ঘাটে তুলে দিস।
– শেখাও, নাতি কেও মান্ধাতার আমলের খিস্তি শেখাও। আজ পাবে না ওকে। হবু নাথবউ এর সাথে ভ্যালেন্টাইন্স ডে মানাছে দেখগে যাও।
– কি টাইন? বুঝি নে বাপু। সব বেলেল্লাপনার ছুতো।
– হুমম্, এমন ভান করছ যেন ধোয়া তুলসীপাতা। মনে পড়ে স্টেশানের ধারে বকুলগাছের তলায়….
– ওরে কে কোথায় আছিস রে? তুলে নে আমাকে…
– কেউ নেই গিন্নি, শুধু তুমি আর আমি। সেই বকুলবাসরের কোন রেজাল্ট আজ বাড়িতে নেই।
– অ গোবিন্দর মা, তুউ এলি নাকি? দরজায় শব্দ হলো মনে হচ্ছে। গিয়ে দ্যাখো না। হেঁসেল ছেড়ে বাত নিয়ে উঠব কি করে?
– সেদিনও ছিল দুপুর এমন….
– বিট্টুর ভাত বসাতে হবে। চাল এর ড্রাম টা কোথায় যে রাখে বৌমা!
– আর ঘড়ির কাঁটায় তখন, প্রশ্রয়।
– গ্যাস ফুরিয়ে গেছে কাল। বুক করেছিস বুড়ো?
– মনে কি পড়ে সেদিন, বলেছিলাম তোমায়?
– প্রেশারের ওষুধ! খাওয়া হয়নি আজ!
– শিগগির যাও, প্রেশার টা বাড়ছে মনে হচ্ছে। সেদিন দুজনে….
বিট্টুর ঝাঁকুনিতে ঘুম ভাঙল রজতের।
– কি বিড়বিড় করছিলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দাদু?
– তুই এসে গেছিস?
– হ্যাঁ, আর দেখো কাকে নিয়ে এসেছি। আমার ফ্রেন্ড মৌ। মৌ, মিট মাই বেস্ট ফ্রেন্ড, আমার দাদু।
– হ্যালো মৌ, যাও তোমরা ওপরের ঘরে বসে গল্প করো।
ইশ্, সুনন্দার প্রেশারের ওষুধ টা সত্যিই সেদিন মনে করে দেওয়া উচিৎ ছিল। ঠিক একবছর। রজতের আজ অন্য ভ্যালেন্টাইন্স ডে।
লেখক ~ অরিজিৎ গাঙ্গুলি
প্রচ্ছদচিত্র উৎস ~ lordapags.com
প্রচ্ছদচিত্র অলঙ্করণ ~ Anari Minds
2 comments
isssshhh…….kii oshamannyo golpo ,ar oshadharon lekha !!
Tomar comment eo darun twist. Prothome bhablam “jaghonno” bolte jachho.. tarpor twist ta elo 😀
Comments are closed.