বৈষম্য
অভিজাত চিলড্রেন্স পার্কে কচিকাঁচারা খেলতে ব্যস্ত। শীতের ছুটির প্রতিটা মুহূর্ত তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে সকলে। কেউ দুলছে দোলনায়, কেউ merry-go-round, আবার কেউ see-saw| বড় নামি স্কুলে পড়া সকলে mannered , trained , কোনো চিৎকার বা হুল্লোড় নেই। এক এক জন এক একটা রাইড শেষ করছে, আর একজন তাতে উঠছে ।
পার্কের ভিতরে গেটের পাশেই কচি কাঁচাদের মায়েদের ও জটলা, সকলে মিলে Whatsapp এ একটা ভিডিও দেখে হেসে লুটোপুটি। হঠাৎ একটা মায়ের চোখ পড়লো পার্কের গেটের দিকে; কয়েকজন নোংরা জামা-কাপড় পরা পাশের বস্তির বাচ্চা উঁকি ঝুঁকি মারছে পার্কে ঢোকার জন্য।
“এ হে হে !!! যা যা …” – একটা মা ওদের কে চিৎকার করে ওঠে। বাচ্চা গুলো ভয়ে দৌড় পালায়, মা পার্কের গার্ড কে একটু হম্বি তম্বি করে আবার স্মার্টফোনে মশগুল হয়ে যায়।
হটাৎ কিছুক্ষন পর মায়েদের সম্বিৎ ফেরে পার্কের ভিতর কোলাহলে। এতো চিৎকার, চেঁচামেচি কিসের? কেও পড়ে, টড়ে গেল নাকি?
না তা তো না , এ চিৎকার তো হুল্লোড় এর চিৎকার… খুশির চিৎকার। পার্কের মাঝ খানে তখন সকল কচিদের বাঁধনছাড়া, নির্ভেজাল আনন্দ। সেই বাচ্চা গুলো পার্কে ঢুকে এসেছে সাথে নিয়ে একটা সস্তার লাল বল, সব কচিকাঁচারা দুটি দলে ভাগ হয়ে সেটা নিয়ে ফুটবল খেলতে ব্যস্ত। কখনো পড়ছে মাটিতে, আবার নিজেই উঠে দৌড়াচ্ছে। ওদের আনন্দ দেখে মা রা তখন ভুলেছে স্মার্ট ফোন, ভুলেছে ওদের কে বারণ করতে খেলতে। কচি গুলো এখনো শেখেনি ধনী গরিবের প্রাচীর, শেখেনি বন্ধুত্বের বৈষম্য।
লেখক পরিচিতি ~ আনন্দ-র জন্ম 1st April 1984, বীরভূম জেলার চৌহট্টে। এম.সি.এ এবং এম.বি.এ পাশ করে বর্তমানে কলকাতায় তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র কগনিজ্যান্ট-এ কর্মরত। প্রযুক্তিবিদ্যায় পারদর্শীতার পাশাপাশি ওনার লেখনীর দৌরাত্ম ও অতুলনীয়! একটি স্বরচিত কবিতা সংকলনের বই প্রকাশ আনন্দর স্বপ্ন। সেই তিলে তিলে গড়ে ওঠা স্বপ্নের স্বাদ পেতে পারেন Whispering Mirror -এ। দৈনন্দিন জীবনের টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতা ওনার মুখ থেকে শোনার আনন্দই আলাদা। অশেষ ধন্যবাদ আনন্দ বাবুকে আমাদের anariminds.com এ ওনার ছোটগল্প পাঠানোর জন্য। উপভোগ করতে থাকুন ওনার ভিন্ন স্বাদের গল্পমালা।
প্রচ্ছদচিত্র উৎস ~ Financial Times
প্রচ্ছদচিত্র অলঙ্করণ ~ Anari Minds
One thought on “বৈষম্য”
short & sweet …. hope it comes true in real life everyday
Comments are closed.