মজার গ্রাম

Friends, কবিতার খাতা, বাংলা
আজব গাঁয়ে সবুজ ইদুর,
করত চুরি বেছে বেছে,
আরেক ছিল লালচে হুলো,
অলক্ষুণে কাঁদত মিছে।
বলত মোড়ল,”হোক না চুরি,
কিন্ত কেন বেছে বেছে?
একদল কে মারছে ইদুর,
অন্যদল তো দিব্যি আছে”।
পুঁথি পড়ে বললে মোড়ল,
“একটা বিধান শোনাই পড়ে
করলে খনন পদ্মপুকুর,
সবজে ইদুর যাবেই মরে।”
পুকুর ভরে পদ্ম হলে,
গাঁ ভরে যায় গোখরো সাপে।
সে সাপ আবার পকেট কাটে,
গ্রামবাসী রয় বিরাট চাপে।
সবার মাথায় হাত পড়ল,
এ তো ভারী বিপদ হল,
লালচে হুলো,সবজে ইদুর,
গোখরো মিলে কাঁদিয়ে দিল।
ছোট্ট কিছু বাচ্চা এসে,
বলল হেঁকে “মোড়ল দাদু,
দাও তো দেখি লাঠি সোঁটা,
আমরা দেখাই দারুণ জাদু।”
লাঠির ঘায়ে লালচে হুলো,
ইদুর হল পগারপার,
ফাটলো মাথা গোখরো সাপের,
দাঁত দুটি ও চুরমার।
গ্রামবাসী তো বেজায় খুশী,
বাচ্চার দল বাঁচিয়ে দিল।
উৎসবে ঢাক বাদ্যি বাজে,
ঘরে ঘরে জ্বলছে আলো।
বাচ্চার দল চেঁচিয়ে বলে –
“তোমরা সবাই কী যে কর?
কাজ তো সবে আধা হল ,
হাফ কাজ তো বাকি আরও”।
যেই না শোনা,ওমনি নাচন,
বাদ্যি গেল থেমে।
পাংশুটে মুখ সকল লোকের,
শরীর গেল ঘেমে।
“আর কী বাকি?আর কী আছে?
এখনও বিপদ আছে?”
বাচ্চারা সব আঙুল তোলে,
“ঐটা বাকি আছে।”
সবাই তাকায় মোড়ল পানে,
“উনি কী দোষ করলেন?”
বাচ্চা বলে – “ভুল বিধানে,
উনিই তো সব মারলেন।”
হাত পা ধরে চেঁচায় মোড়ল,
“আমায় ছেড়ে দাও,
ইদুর আমায় শস্য দিত,
বেড়াল দিত ভাও।
গোখরো আমায় দেয়নি কিছুই,
কিন্তু দিতে পারত,
এমন ভাবে পড়ব ধরা,
কে আর তা জানত?”
বাচ্চা শুধোয় – “মানছো সবাই,
ঠগের ব্রজবুলি?
নইলে বল লাঠির ঘায়ে
উড়িয়ে দিচ্ছি খুলি।”

~~~♣~~~

© দেবপ্রিয় মুখার্জী