পুরুলিয়া পাঁচালি – ২

কবিতার খাতা, বাংলা

মোরগ ডাকিয়া শেষ,সাত ঘটিকা,
লুচি আর দমআলু,দিল বার্তা।
তড়িঘড়ি প্রাতঃহ্রাস করি সমাপন,
সদাজীর বৃশ্চিকে বসি চারজন।

লোয়ার-আপার বাঁধ দেখিলাম বেশ,
সেল্ফির ঘটাতে ডেটাপ্যাক্ শেষ।
ময়ূর পাহাড়ে চড়ে চোখ ছানাবড়া,
“Feeling রা’প্রতাপ with চৈতক ঘোড়া”।
ঝটপট সেরে বজ রঙ্গীর ভেট,
সদাদা বলেন “যাব মুরুগামা স্ট্রেট”।

এরপর চলে গাড়ি মুরুগামা পানে,
জমিয়াছে যাত্রা সুরা আর গানে।

মুরুগামা সারিয়া,পৌছোলেম যেথা,
পুরুলিয়া বাসী তারে কহে দেবলঘাটা।
বনঘেড়া মন্দির, কাঁসাইয়ের ধারে,
মন কহে,রইয়া যাই,ফিরিব না ঘরে।

শ্রীকৃষ্ণের খুল্লতাতঃ,শ্রী দেবল সেন,
আসিয়া পুরুলিয়া,মন্দির গড়লেন।
অপদার্থ পাঠানের কামানের গোলা,
খেলিয়া গিয়াছিল ধ্বংসের লীলা।

দালানে উপবিষ্ঠা সাধিকা মামণী,
সাক্ষাতে দশভূজা,অতি জ্ঞানীগুণী।
চৌত্রিশ বর্ষ তার মন্দিরে বাস,
শুনাইলেন দেবলঘাটার দীর্ঘ ইতিহাস।

খানিক জিরাইয়া নিয়া কাঁসাইয়ের তীরে,
আহার সাঙ্গ হইল হিলটপ্ মোড়ে।
মনে ফাটে দরবেশ,”আরে কেয়া বাত!!”
এসে গেছে বামনি জলপ্রপাত।

প্রবল ধারার নীচে,করিলাম স্নান,
হইল যারে কহে Rejuvenation।
তুর্গায় বসে গিলি চিরতার জল,
কথা গেল জড়িয়ে,পদ টলমল।

নৈশভোজে রাঁধেন কেয়ারটেকার,
জীবনকাহীনি শুনে,হল মন ভার।
দিনে চাষবাস,রাতে পাহারাদার,
মুখে হাসি নিয়া পালেন অভাবী সংসার।

যাত্রায় যবনিকা,ফিরিবার পালা,
অফিস স্মরণ করি বুকে ধরে জ্বালা।
পুরুলিয়া পাঁচালি হল সমাপন,
দুই দিনে পুরুলিয়া জিতিয়াছে মন।

কলমে ~ গুলগুলভাজা

ছবি ~ গুলগুলভাজা