Valentine দেহি নমোহস্তুতে
ডিং ডং!
– কে?
– কাকু, চাঁদা টা।
৫ মিনিট পর…
– তোরা এখনও দাঁড়িয়ে!
– তো কাকু আপনি কি ভাবলেন চলে যাব?
~ ~ ~
হেডস্যার ঢুকলেন হাতে একটা লম্বা কাগজ নিয়ে।
– বলে ফেল চটপট কে কে ভলেন্টিয়ার হবি?
হঠাৎ একটা কলরবে ক্লাসরুম টা ভরে গেল। সবার মিলিত চিৎকারের সারাংশ টা ছিল অন্য স্কুলে নেমন্তন্ন করতে যেতে ইচ্ছুক ছাত্রদের সংখ্যা টাই সবচেয়ে বেশি।
– না, সবাইকে যেতে দেওয়া হবে না। দাঁড়া থোবড়া গুলো বুঝতে দে। অর্নব, অভিজ্যোতি, প্রীতম, অর্কদীপ আর সপ্তর্ষি, ব্যাস এই পাঁচ জন।
পেছন থেকে ভেসে এলো সৌম্যদীপ-এর আর্ত টিটকিরি।
– এটা কি ঠিক হল স্যার? এই একটাই তো সময়। দিলেন তো সব চটকে।
~ ~ ~
বাহাদুর এর কড়া পাহারায় দু পক্ষই তৃষ্ণার্ত থেকে গেল। হাতে করে ৫ টা কার্ড এনে হেডু-র টেবিলের ওপর রেখে মুচকি হেঁসে বাহাদুর বলল, “যেমন অর্ডার দিয়েছিলেন, ঠিক তাই করেছি। সবাইকে গেট থেকেই বিদায় দিয়েছি। কি একটা “সুন্দরী” না কি স্কুল থেকে কয়েকজন এসে তো হাতে পায়ে ধরছিল ঢুকতে দেওয়ার জন্য, তবে আমি শুনিনি।“
হেডুর ঠোঁটের কোণে একটা পরিতৃপ্তির হাসি।
ভীমু গিয়ে সৌম্যদীপ-এর মাথায় হাত বোলাতে লাগলো।
– চিন্তা করিস না। মধুরিমা কে পরে একটা ফোন করে নিস। তাহলেই হবে।
তারাসুন্দরী হাই স্কুল যে ওই অপমানের বদলা এইভাবে নেবে সেটা ভাবতেও পারেনি অর্নব অভিজ্যোতি-রা। ঘিয়ে রং এর জামা দেখেই দারোয়ান সজাগ হয়ে উঠল। মুখের ওপর সদর দরজা টা আসতে করে বন্ধ হয়ে গেল।
দোতলার ব্যালকনি থেকে সম্মিলিত উষ্ণ অভ্যর্থনা টাই সম্বল করে ফিরে এলো আমাদের সেনাবাহিনী।
~ ~ ~
পিকলু অনেক খুঁজে চার টে বই মনোনীত করল ঠাকুরের বেদীর পাশে রাখার জন্য – অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল আর বাংলা। এই চার টে বিষয়ে যে পিকলু কাঁচা সেটা ওর বাবা আগেই সন্দেহ করেছিল। তবে ঠাকুরের সামনে বই জমা দিলে সেটা যে তিন চার দিন হাত দেওয়া যাবে না, সেই প্রাচীন নিয়ম টাই পিকলু কে বেশি প্রভাবিত করেছিল।
– মা, কটা নাগাদ ঠাকুর মশাই আসবেন?
– ১০ টা হবে মনে হয়। তুই চন্দন টা বেটে রাখ ।
– ১০ টা?! শর্টে সারতে বলবে।
– না রে। দেরি ই হবে আজ পুজো মিটতে। পুস্পাঞ্জলির আগে ৩ খানা হাতেখড়ি আছে। পাশের বাড়ির মুনমুন এর বোন, ওপাড়ার তোজো, আর আমাদের কাজের মাসির মেয়ে।
– এখানে কি আর কোনো বাড়িতে পুজো হয় না!
পিকলুর সমস্ত প্ল্যান চটকে চৌচির। সজারু তোতন কে আগেই বলে দিতে হবে। অনেক সমাজ সেবা করার আছে আজ। কজন বোঝে।
~ ~ ~
যথারীতি পুরুত লেট। রানিং সাইকেলের সামনে চোর ধরার মতো করে দাঁড়িয়ে বকা কে ফাইনালি ধরে আনা গেছে। উঠতি পুরুত। তবে মনোযোগ আছে কাজে, আর কথাও শুনবে।
পুস্পাঞ্জলির মন্ত্র ভুল হলেই মা সরস্বতী বদলা নেন। তাই খটমট শব্দ গুলো এড়িয়ে যাওয়া টাই বুদ্ধিমানের কাজ। ভুল বলার থেকে না বলাই ভালো। লজিক্যালি নিজের কাছে কারেক্ট থাকা যায়।
– ফুল গুলো কেউ ছুঁড়বে না। সবাই ঝুড়ি তে দাও।
পিকলু আড়চোখে দেখে নিল মুনমুন কে।
– দাও আমার হাতে দাও, ঝুড়িতে দিয়ে দেবো।
ছোঁ মেরে ফুল গুলো ছিনিয়ে নিয়ে চলে গেল মুনমুন-এর বোন। দাঁত কিড়মিড় করা ছাড়া আর বিশেষ কিছু আস্ফালন দেখাতে পারেনি অবশ্য পিকলু।
~ ~ ~
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র আগে অবশ্য কুল খাওয়ার কোন বাধা থাকে না। তবে আজকের দিন টা স্পেশাল। সকাল থেকেই সৌমিলি স্কুলে স্কুলে ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে “সিলেবাসে নেই” এর দলবল নিয়ে।
শাড়ি তো অন্য দিন ও মেয়েরা পরে। তবে সজারুর মনে হয় বাসন্তী শাড়ি তে মেয়ে গুলো হঠাৎ আজ কেমন যেন অনেকটা ম্যাচিওর হয়ে ওঠে। দেখলেই বুকের মধ্যে একটা বড়ো পাথর উড়ে এসে জুড়ে বসে।
যাই হোক, ঝারি মারার প্ল্যান রেডি। আগে বাধ্যতামূলক বৈধ প্রেমিকা দর্শন। তারপর যেমন খুশি দেখ। হাতে সময় অল্প, টাস্ক অনেক। অতএব যাত্রা শুরু।
~ ~ ~
পিকলুর কেস টা সোজা হয়েও বেশ জটিল। দুটো বাড়ির মধ্যে ব্যবধান ২০ ফুটও হবে কিনা সন্দেহ। তবুও দেখা করতে দুজনকে ২০ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যেতে হয়। কারণ? যাতে চেনা কেউ দেখে চিনে না ফেলে। কি জ্বালা! অতঃপর পোস্টম্যান সজারু মুনমুন কে নিয়ে পৌঁছে যায় ব্রিজের নীচে। এদিকে সাগ্রেদ তোতন ডেলিভার করে পিকলু কে। পুরো সিক্রেট মিশন। একজন কেস খেলেই পুরো র্যাকেট ধরা পড়ে যাবে, এমনি সব সম্পর্কের বুনোট।
যাই হোক। বেচারা পিকলু হাতে পেলো জাস্ট ২ মিনিট। কথা শুরু করার আগেই দ্যাখে মুনমুন উলটো দিকে হাঁটতে শুরু করেছে। কারণ টা জানা গেল ১ ঘণ্টা পর। মুনমুনের কাকিমার ভাই এর হবু বৌ এর জেঠু নাকি পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। দুঃখ হয় মাঝে মাঝে পিকলুটার জন্য।
তবে দুঃখ টা একটু বেশি তোতনের। পিকলুর যেমন ২০ ফুটের নাগালে, তোতনের ও ২০ বার বাস ট্রেন পালটে পৌঁছে যাওয়া যায় গন্তব্যে। তাই এইদিন টা তোতনের অন কল-এই কেটে যায়।
– তুমি কেন বেরোবে না ভাই এর সাথে ওখানে বল?
– . . . . . . . . . . . . . . . . . .
– তুমি যদি আজ ওখানে না বেরোও, তাহলে আমিও এখানে বন্ধুদের সাথে বেরোব না।
– . . . . . . . . . . . . . . . . . .
– ঠিক আছে যাও আর সারাদিন ফোন করবে না. . . . . . . . .
আচ্ছা ঝামেলা! সজারুর পায়ের কাছে আছড়ে পড়ল টাটা ইন্ডিকমের সবুজ স্ক্রিন ওয়ালা মোবাইল। আব্ তাক ছাপ্পান্। তোতনের ট্রেডমার্ক স্টাইল। এরপর বিকেলে হাতে আসবে নতুন সেট। ততক্ষণ অবধি তোতন শুধুই আমাদের।
বাকি রইল সজারু। হাতে চামকাগজে মোড়া ভূমি-র “যাত্রা শুরু” ক্যাসেট আর একটা বড় সাইজের ডেয়ারি মিল্ক। শখ কম নয় ছেলের।
– কখন আসবে, কোথায় দিবি, কিছু ঠিক করেছিস?
– তোদের হেল্প চাই। একটা ফোন করতে হবে বুথ থেকে ওর বাড়িতে।
– আবার নাটক শুরু করলি? এগুলো যখন জানতিস করতে হবে, তখন আর দুটো ডেয়ারি মিল্ক কিনতে কি ফেটেছিল?
– খাওয়াব ভাই সিওর খাওয়াব। আজকে মানিব্যাগ নিয়ে বেরোইনি। কাল পাক্কা। একবার জাস্ট দেখা করিয়ে দে। এগুলো না দিতে পারলে কেস খেয়ে যাব।
– না দিলে কেস? পাগল তো!
– বাড়ি নিয়ে ঢোকা যাবে না বস্।
বুথের ছোট্ট কাঁচের ঘরে ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়ে তোতন আর পিকলু। সামনেই একটা ১০০ পাওয়ারের বাল্ব।
– তুই লাগা।
– আগের দুবার আমি লাগিয়েছি। আজ তোর টার্ন।
– লাগাতে ভয় পাস সেটা স্বীকার কর।
ক্রিং ক্রিং!
– হ্যালোওওও………
– (সেরেছে, ওর মা ধরেছে!) আম্ম্ উম্ম্, কাকিমা মৌপিয়া আছে?
– তুমি কে বলছ?
– আঃ… আম্ আমি রূপক।
– রূপক? এই নামে তো কাউকে চিনি না।
– না মানে মৌপিয়া কি বেরিয়ে গেছে?
ফোন রাখার শব্দটা হজম করা গেলেও কানের গোড়ায় বাল্ব ফাটার ধাক্কা টা আজও সামলাতে পারেনি ওরা। কি কোইন্সিডেন্স মাইরি!
চকলেট টা চিবোতে চিবোতে তোতন জিজ্ঞেস করল,
– ক্যাসেট টা কি করবি ঠিক করলি?
– তোদের নজর লেগেই সব ভেস্তে গেল। এটাও নিয়ে যা এবার। বাড়ির বারান্দায় বসে শোন শালা।
পিকলু ই উপায় টা বাতলালো।
– স্যার, এটা রাখুন। আপনার সরস্বতী পুজোর গিফট্।
– মানে? সরস্বতী পুজোতে কেউ আবার টিচার দের গিফট্ দেয় বলে তো শুনিনি!
– আপনি না থাকলে আর সরস্বতী কিসের! এটা আমাদের তিনজনের তরফ থেকে। শুনে দেখবেন।
কর্তব্য পালন করতে করতেই ১২ টা বেজে গেল। এখুনি গিয়ে লাইন না দিলে স্কুলের ভোগ টাও মায়ের ভোগেই যাবে।
~ ~ ~
ক্লাসরুমের দেওয়াল আর সিলিং টা দেখলেই মেনু টা স্পষ্ট হয়ে যায়। চাটনির টম্যাটো গুলো হাফ আটকে হাফ ঝুলে, পাখার ব্লেডে আমসত্ত্ব ডাইভ মারবার জন্য রেডি, ব্ল্যাকবোর্ডের গায়ে বেগুনভাজার খোসা। জমপেশ মেনু মনে হচ্ছে।
– কি রে, খাওয়া দাওয়া সব ঠিক আছে তো?
– স্যার, এদিকে আর একটু খিচুড়ি দেবেন?
কোমরে গামছা বেঁধে হাতে বালতি নিয়ে স্যার এগিয়ে চললেন বেঞ্চের ফাঁক দিয়ে দিয়ে। পেছন থেকে হাজরা, সায়ন, দীপাঞ্জন নিক্ষেপ করতে থাকল একের পর এক মিসাইল। দেওয়ালে থাকা মেনুকার্ড এখন স্যারের ধুতি গামছার পেছনেও দৃশ্যমান।
~ ~ ~
সরস্বতী পুজোর দুপুরে ক্যুইজে পার্টিসিপেট করা টা সজারুর পুরনো অভ্যাস। তবে এই একটা ব্যাপারে ও কোনো কম্প্রোমাইস পছন্দ করে না। তাই সজারুর টীমে ঠাঁই হয় না তোতন বা পিকলু কারোরই। দেবমাল্য টা ঠিক কোথা থেকে হাজির হয়ে যায় দুপুর হলেই।
বি ই কলেজের মাঠে আজ বিশাল ক্যুইজ।
– আমি, দেবমাল্য আর সঞ্জীব দা বসছি। তোরা দুজন আমার ভাই কে নিয়ে বসে যা।
– তোর ভাই ও ক্যুইজ করে নাকি?
– না না, ৩ জন না হলে বসতে পারবি না। বন্ধুদের জন্য এইটুকু ব্যবস্থা করতে পারব না!
স্টেজের ওপর ৮ টা টীম তৈরী। ক্যুইজ মাস্টার দুঁদে লোক দেখলেই মনে হয়।
ক্যাও রাউন্ড শুরু। অনেকটা এখনকার গুগলি রাউন্ডের মতো।
– সত্যজিৎ রে ওনার সিনেমা থেকে কোন চশমা ব্যান্ করেছহিলেন?
– রে ব্যান্।
করতালি তে ফেটে পড়ল সামনের দর্শকাসন। ও বাবা। এ তো চাঁদের হাট। অপ্সরা দের সমাবেশ। পরের প্রশ্ন আমাদের টীম কে। উত্তর দিতে না পারলে প্রেস্টিজ পাংকচার।
– নারকেল গাছ আর ট্রেডার্স অ্যসেম্ব্লি, এই দুই এর মধ্যে মিল কোথায়? টাইম স্টার্টস্ নাও!
মেরেছে! তোতন আর পিকলু মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে করতে দেখতে পেল সজারুর ভাই একদৃষ্টে সামনের সারির গোলাপী শাড়ি পরা রমনীর দিকে তাকিয়ে।
– ওই! তুই জানিস? কিরে? আরে ওটা পরে দেখবি। টাইম চলে যাচ্ছে। জানিস?
– টাইম আপ্। পরের টীমের কাছে বোনাস।
ইতিমধ্যে সম্বিত ফিরে পেয়েছে সজারুর ভাই।
– হ্যাঁ কি বলছিলে তোমরা?
পিকলু প্রশ্ন টা আবার বলে,
– তুই জানতিস এটা?
– হ্যাঁ। উত্তর হচ্ছে “আমাদের কোনো শাখা নেই”। আমায় ডাকলে না কেন?
আজ দিন টা ভাল যাবে না সজারুর। পরের সব প্রশ্ন গুলো পাস্ ই দিতে থাকল তোতনের টীম। একাগ্রতা আর মনঃসংযোগ দিয়ে সজারুর ভাই কেই অনুসরণ করল ওরা। একটা খেলা অলরেডি ওভার। যেটা বাকি, সেটা তেই মন দেওয়া যাক।
সজারু অবশ্য জেতেনি ওই ক্যুইজ টা। তবে সন্ধেবেলা তোতন পিকলু-র বিজয়ী সংঘ থেকে গানের ক্যুইজে বিজয়ী হয়ে ফেরার পেছনে সজারুর অবদান ভোলবার নয়। অডিয়েন্স চয়েস এর জন্য আগেই সজারুর সাথে গট আপ খেলা হয়ে গিয়েছিল তোতনের। নিখুঁত অভিনয় যে আজও ম্যাচ জেতায়, সেটা কারুর ধারনাই ছিল না। ট্রফি টা নিয়ে যে বেঁচে ফেরা গিয়েছিল সেদিন ওদের ডেরা থেকে, সেটাই আজও বিস্ময়!
~ ~ ~
এগরোল, ডিমের ডেভিল এগুলো কে আজকের দিনে নিরুপায় ভাবে দূরে সরিয়ে রাখতেই হয়। কি করা যাবে। শিক্ষাজীবন যে এখনও বিদ্যমান! তবে সরস্বতী পুজোর সন্ধ্যেবেলা তোতনের বাড়ির নেমন্তন্ন টা মিস করার প্রশ্নই ওঠে না।
– বাবা, তোমরা কটা করে কচুরি খাবে একটু আগে থেকে বলে দাও। আমি গরম গরম ভেজে দেবো।
– কাকিমা, আপনি শুরু করুন। আজ ২৫ টা টেনে দেবো।
ভীমুর এই চ্যালেঞ্জ গুলো চিরকালই সহ্য করে গেছে তোতন। তবে আজ রোগা তোতন এর পোকা গুলো নড়ে উঠল।
– হয়ে যাক শালা আজ কম্পিটিশান। তুই যটা খাবি, আমি ঠিক তার থেকে একটা বেশি খাব। চ্যালেঞ্জ।
ভীমুর ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি। শুরু হলো কড়াইশুঁটির কচুরি আর আলুরদম্ বিতরণ।
পিকলু পেটরোগা। ৩ টের পরেই বেল্ট আলগা করতে শুরু করল। সজারু্র ৭ এ মধ্যাহ্ন। অঞ্জন ৫ এই কাহিল। ওদিকে ভীমু ২২ আর তোতন ১৯। খেলার এখনও ১৫ মিনিট বাকি। কাকিমা দেওর কে ফিট করে ফেলেছেন অলরেডি কচুরি ডেলিভার করার জন্য। তোতনের দাদা কাঁচুমাচু মুখ করে পাশে দাঁড়িয়ে, আজ ভাগ্যে আর কচুরি জুটবে কিনা সন্দেহ!
অবশেষে শেষ বাঁশি বেজে উঠল। কাকা দরজার গায়ে নেতিয়ে পড়েছেন। দাদা আশাহত। ম্যাচের ফাইনাল স্কোর তোতন ২৫ ভীমু ২৮। পাশের টেবিল টা ধরে কোনোরকমে উঠে দাঁড়ালো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ান।
– হাত টা কোথায় ধোব কাকিমা?
– একতলায় বেসিন আছে। ওমা! আর খাবে না?
– নাঃ। বাড়ি ফিরে মায়ের লুচি গুলোও তো একটু খেতে হবে।
ভীমু নামছে সিঁড়ি দিয়ে। পেছনে রানার আপ তোতন। তার পেছনে বাকিরা। হঠাৎ………!!
ভীমুর এই গুণ টা আগে বলাই হয়নি। কারুর বাড়ি থেকে কিছু নিলে সেটা যাওয়ার আগে ফিরিয়েও দিয়ে যেতে ভীমু ভোলে না। সেটা যে সিঁড়িতেই হবে, কেউ ভাবতে পারেনি! দেওয়াল আর রেলিং বেয়েই বাকিটা নামতে হল পিকলুদের।
আজও ভীমু তোতনের বাড়ি এলে ওর কাকা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করেন, “আবার করবে না তো রে?”
~ ~ ~
রাতে ঠাকুর তো প্যান্ডেলে একা থাকবেন না।
– কে কে জাগবি বল?
– প্রভাত ভিডিওস্ থেকে এনেছিস যেটা বলেছিলাম আনতে?
– রাস্তার মাঝখানে ওটা হতো না ভাই। তবে ভালই এনেছি তার বদলে। গা ছমছমে ভুতের বই – “পুরানা মান্দির”। রথ ও দেখবি, আর কলাও……………।
~~~ @ ~~~
স্মার্টফোন, ফেসবুক, ওয়াট্সঅ্যাপ।
সত্যি করে বলো তো ঠাকুরের সাথে সেলফি তুলে বা “feeling happy AT Amra Sobai Sangha WITH Shweta and 3 others” স্ট্যাটাস আপডেট দিয়ে কি সেই একইরকম আনন্দ পাও যেগুলো ছোটবেলার স্বতঃস্ফুর্ত দিনগুলো তে উপভোগ করতে পারতে।
জানিও আমাদের কমেন্টস সেকশানে।
লেখক ~ অরিজিৎ গাঙ্গুলি
প্রচ্ছদ চিত্র উৎসঃ indiatimes.com
প্রচ্ছদ চিত্র অলঙ্করণ : Anari Minds
9 comments
Didi tar preme porechilo sojarur sob bondhu gulo .. Jodio sei group er captain chilo sojarur Bhai .. ” ami ” ?????
You took the name of Didi. You should go hide now.:P
Wah!! Puro open booklet !! ?????
Thanks Arindam!
Osadharan bhai,,school days gulo…chokher samne jol jol kore uthlo.
Thanks Pranab!
“খাওয়াব ভাই সিওর খাওয়াব” – toder 2 jon ke, puro chhotobela ta evabe golper boi er “pristha” e sajiye dewar janya….egiye chol…saathe aachhi!! ☺☺
সাথে থাক ভাই! কত কি করার আছে বাকি! এ তো সবে শুরু।
Comments are closed.