গৃহশান্তি

Story, আনন্দ আকাশ, বাংলা
সকাল বেলা মেইল টা পেয়ে বেশ ভালোই লাগলো , – “সুইট এট মাই ডেস্ক ” , মুখার্জী দা পাঠিয়েছে । সকলে মিষ্টি তো নিচ্ছি , কিন্তু কি কারণে মিষ্টি সেটা আর বলছে না মুখার্জি দা । শুধু মুচকি মুচকি হাসছে আর বলছে – ” আরে মিষ্টি খাও না বাবা , এতো জেনে কি হবে ” । এতো মহা জ্বালা , সারাদিন সবার আলোচনার বিষয়বস্তু কি – কি কারণ হতে পারে ? পুরো শার্লক হোমস , ফেলুদা , ব্যোমকেশ, সবার মতো করে ভেবেও কুল কিনারা করা যাচ্চে না , চাপা উত্তেজনা  চারিদিকে । তো , বিকেলের টি – ব্রেকে চেপে ধরা হলো , ” আরে গৃহশান্তি ভায়া , ওই যে ভাগাড়ের মাংসের খবর , সে জন্যেই তো আমার বাড়িতে শান্তি ফিরে এলো ! ” ” একটু খুলে বলো দাদা ! ভাগাড়ের মাংসের সাথে তোমার ঘরের শান্তির কি সম্পর্ক ?”
 
” আরে ভাই , কি বলবো , আমার বাড়ির ঠিক সামনে একটা ঠেলা রেস্তুরাঁ খুলেছে ১ – ২ মাস । ওই রুটি , তরকা , এসবের দোকান আর কি ! আর দাম ও বেশ কম । আমার গিন্নি আবার এসব খেতে টেতে ভালো বাসে , সেজন্য আমি ও মানা করিনি প্রথম দিকে । ওই পাঁঠার ঘুগনি, মটন চাপ, পরোটা এসব আসছিলো মাঝে মাঝে । গিন্নি ও মনের সুখে সিরিয়াল দেখতে পারতো , রান্না বান্নার হ্যাপা নিতো না । ব্যাপার টা কিছুদিন পর এমন হলো প্রতি রাত্রে ওখান থেকেই খাবার আসতে শুরু হলো , আমার পেট ও হরতাল করলো । আমি গ্যাসের রুগী ভাই , ওসব কি আর প্রতি দিন সহ্য হয় ? বৌ কে বললেই একদম পুরো মেজাজ সপ্তমে – ” নিজে করে নাও যদি এ রান্না মুখে না রোচে !!” খুব অশান্তি ভাই !! তো , এই ভাগাড়ের মাংসের খবর টা বেরিয়ে ভাই কি আর বলবো,বৌ এর মুখ খান এমন হয়েছে যেন একদম জোঁকের মুখে নুন পড়েছে ,
কাল একটু বাজিয়ে দেখলাম – ” যাবে নাকি একটু বাইরে ডিনার করতে ? ” , উত্তর এলো -” গ্যাসের রুগী , আবার বাইরে খেতে যাচ্ছেন উনি , সে তুমি যেতে হয় যাও , বাইরের খাবার খেয়ে জাত খোয়াবো নাকি ? কি খাওয়াতে কি খাওয়াবে কে জানে ? আমি ঝোল ভাত রান্না করছি তাই খাবে । ” – কি যে আনন্দ হলো কি বলবো ভায়া , জীবনে প্রথম বার বৌ এর মুখ ঝামটা ও মধুর লাগলো । ভাগাড় জিন্দাবাদ | “
কলমে ~ আনন্দ
ছবি উৎস ~ http://diningpleasures.blogspot.com
অলংকরণে ~ আনাড়ি মাইন্ডস